Vivo Y20G কি আসলেই গেমিং ফোন?

Vivo Y20G কি আসলেই গেমিং ফোন?

গত ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে ভিভো বাংলাদেশে তাদের Vivo Y20G (ভিভো ওয়াই২০জি) ফোনটি রিলিজ করেছিল। ফোনটির বর্তমান বাজার মূল্য ১৭৯৯০ টাকা। আজকের পোস্টে আমরা Vivo Y20G মোবাইল ফোনটির ক্যামেরা, পারফর্ম্যান্স ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব! চলুন শুরু করা যাক।

Vivo Y20G (ভিভো ওয়াই২০জি) ফোনের বিস্তারিত

ক্যামেরা:

ফোনটির প্রাইমারি ক্যামেরা হিসেবে থাকছে ১৩ মেগাপিক্সেল ওয়াইড অ্যাঙ্গেল, ২ মেগাপিক্সেলের ম্যাক্রো ও ২ মেগাপিক্সেলের ডেপথ সেন্সরসহ মোট ৩টি ক্যামেরা। আর সেল্ফি ক্যামেরায় থাকছে ৮ মেগাপিক্সেলের ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা। এতে ভিডিয়ো রেকর্ড করা যাবে ১০৮০ এফপিএস পর্যন্ত। ফোনটির দাম অনুযায়ী আমি বলব এর ক্যামেরা মোটেও পারফেক্ট না। এই দামে ভিভো চাইলে এর থেকে ভালো ক্যামেরা সেটাপ দিতে পারতো। যারা ছবি তুলতে বেশ পছন্দ করেন, ক্যামেরা দিকে আগ্রহ বেশি তারা অবশ্যই এই ফোনটি স্কিপ করতে পারেন।

⏩ আরও পড়ুন: আপনার ফোন ভালো রাখার উপায়!

প্রসেসর ও পারফরম্যান্স:

Vivo Y20G ফোনে অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে ব্যবহার হয়েছে অ্যান্ড্রয়েড ১০, যা পরবর্তীতে অ্যান্ড্রয়েড ১১ পর্যন্ত আপডেট করা যাবে। ফোনটিতে প্রসেসর হিসেবে থাকছে মিডিয়াটেকের হেলিও জি৮০ এবং ম্যালি জি-৫২ জিপিইউ থাকছে ফোনের মাদারবোর্ড হিসেবে। পারফরম্যান্সের কথা চিন্তা করলে সামগ্রিকভাবে মোটামুটি হালকা গেমিং সহ কিছু মাল্টি-টাস্কিং কাজও করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে ফোনটা খুবই গরম হতে পারে। দাম অনুযায়ী Vivo Y20G এর চেয়ে অন্যান্য ব্রান্ডের ফোনগুলোতে যেমন – রিয়েলমি, রেডমিতে ভালো পারফরম্যান্স পাবেন।

স্টোরেজ:

ফোনটি ৬জিবি র‍্যাম সহ ১২৮ জিবি ইন্টার্রনাল মেমরি ভেরিয়েন্টে পাওয়া যাবে বাজারে। এর সাথে থাকছে এক্সট্রা মেমোরি কার্ড স্লট যেখানে আপনি সর্বোচ্চ ২৫৬জিবি মেমোরি ব্যবহার করতে পারবেন। স্টোরেজ দিক দিয়ে আমি বলবো বাজেট অনুযায়ী একদম পারফেক্ট। আপনারা যদি স্টোরেজের কথা চিন্তা করেন তবে ফোনটি অনায়াসে নেওয়া যায়।

ব্যাটারি ও চার্জিং:

Vivo Y20G ফোনটি পাওয়ার করার জন্য এতে ব্যাবহার করা হয়েছে ৫০০০ এমএএইচ (mAh) ব্যাটারি। যা বাজেট অনুযায়ী আমার খুবই পছন্দ হয়েছে। আর সাথে থাকছে ১৮ ওয়াটের ফাস্ট চার্জিং সিস্টেম। কিন্তু এতে থাকছে না কোন ইউএসবি টাইপ-সি (USB Type-C) পোর্ট যেটা সত্যিই আমাকে নিরাশ করেছে। ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ইউএসবি টাইপ-বি পোর্ট। ভিভোর উচিত ছিল এই দামে ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট অফার করার, যেখানে একই প্রাইস রেঞ্জে অন্যান্য ব্র্যান্ডগুলো টাইপ-সি দিচ্ছে। তবে আপনি ফোনটা থেকে বেশ ভালো ব্যাটারি ব্যাকাপ পাবেন। হালকা ব্যবহার করলে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা অনায়াসে চলে যাবে আর গেমিং করলে / ভারি ব্যবহার করলেও ৮/১০ ঘণ্টা চালিয়ে নিতে পারবেন।

⏩ আরও পড়ুন: হারানো মোবাইল ফোন কীভাবে খুঁজে পাবেন?

ডিসপ্লে, বডি ও ডিজাইন:

এই ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৬.৫১ ইঞ্চির আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লে যার রেজুলেশন পাবেন ৭২০*১৬০০ পিক্সেল। আপনি মাল্টি-টাস্কিংয়ের সুবিধাও পাচ্ছেন। দাম অনুযায়ী বলা যায় ডিসপ্লেটি মোটামুটি ঠিক আছে।

আর এর বিল্ট কোয়ালিটি আমাকে অনেক অবাক করেছে। ডিসপ্লেতে নচ ক্যামেরা সেটাপ ব্যবহার করা হয়েছে। ফোনটি প্লাস্টিক বডির তৈরি। কিন্তু আপনি ফোনটি হাতে নিলে একটা প্রিমিয়াম ফিল পাবেন। পেছনের ডিজাইনটা আমার খুবই ভালো লেগেছে যদি Vivo Y19 এর মতো ডিজাইন করা হয়েছে। কিছুটা ম্যাট ইফেক্ট দেওয়া আছে। মোট কথা ডিজাইন বেশ ভালো। আর থাকছে সাইড-মাউন্টেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট সিস্টেম যেটাও বেশ ফাস্ট কাজ করে।

সার্বিকভাবে কেমন?

যদি দাম অনুযায়ী সার্বিকভাবে বিবেচনা করা যায় তবে আমি বলব এই দামে Vivo Y20G নেবেন না। একই দামে বাজারে আরও ভালো ভালো ফোন রয়েছে যেগুলোর স্পেসিফিকেশন অনেক ভালো। আপনি সেগুলো পছন্দ করতে পারেন। আর যদি খুবই আগ্রহ থাকে এই ফোনটি নেওয়ার তবে বলে রাখি এর থেকে ভালো কোনো ছবি আশা করা যাবে না। তবে মোটামুটি গেমিং করতে পারবেন। যেহেতু ৫০০০ এমএইচ ব্যাটারি থাকছে তাই বেশি সময় ধরেও গেমিং করতে পারবেন। তবে আমার সাজেশন এই ফোনটি না নেওয়ার।

আশা করি সবাই Vivo Y20G (ভিভো ওয়াই২০জি) ফোনটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেয়েছেন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। আর কোনো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন। ধন্যবাদ।

⏩ আরও পড়ুন: জনপ্রিয় পাঁচটি ফ্রি ভিপিএন!

পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন:

মন্তব্য করুন: