বর্তমানে ভিডিও ইডিটিং একটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং স্কিল! কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে ইউটিউবে বা ফেসবুকে ক্যারিয়ার গড়তে চান, কিংবা ভিডিও ইডিটর হিসেবে ফ্রিল্যান্স সার্ভিস দিয়ে ফিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়তে চান, দুটোর জন্যই আপনাকে ভিডিও ইডিটিং শিখতে হবে! এখন ভিডিও ইডিটিং শেখা মানে হলো- ইডিটিং সফটওয়্যারগুলোর কাজ শেখা! প্রফেশনালি ভিডিও ইডিটিং করতে গেলে, মোবাইলে কাজ হবে না, আপনাকে কম্পিউটার দিয়েই কাজ করতে হবে! ফলে আপনাকে ভিডিও ইডিটিং এর পিসি সফটওয়্যারগুলোর কাজই শিখতে হবে! তো, টেকউইকির আজকের পোস্টে আমরা— কম্পিউটারের সেরা ৩টি ভিডিও ইডিটিং সফটওয়্যার সম্পর্কে বিস্তারিত জানব; যেগুলোর কাজ শিখলে আপনি ভিডিও ইডিটিং সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন! চলুন তাহলে শুরু করা যাক!
সেরা ৩টি ভিডিয়ো ইডিটিং সফটওয়্যার:
অ্যাডোবি প্রিমিয়ার প্রো [Adobe Premiere Pro]:
বিখ্যাত অ্যাডোবি কোম্পানির প্রিমিয়াম ভিডিও ইডিটর সফটওয়্যার হলো Adobe Premiere Pro। ফটোশপ ও ইলাস্ট্রেটরের পরে, অ্যাডোবির সবচেয়ে জনপ্রিয় সফটওয়্যারগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো এই প্রিমিয়ার প্রো! এই সফটওয়্যারকে ভিডিও ইডিটিং এর কিংও বলা যায়। কেন নয়? পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ইউজার নিয়ে মার্কেটের সিংহভাগ ধরে রেখেছে প্রিমিয়ার প্রো! বর্তামেন ইউটিউবের ভিডিও, ফেসবুকের ভিডিও, নাটক – ধারাবাহিক – ওয়েব সিরিজ থেকে শুরু করে হলিউড ও বলিউডের সমস্ত মুভিসহ যত প্রফেশনাল ভিডিও কন্টেন্ট রয়েছে, তার প্রায় সবটাই সম্পাদনা করা হয় এই Adobe Premiere Pro সফটওয়্যার দিয়ে। আপনি Adobe Premiere Pro এর স্কিল গেইন করতে পারলে, শুধু নিজে নিজের ইউটিউব চ্যানেলের জন্য অথবা ফেসবুক পেজের ভিডিওগুলো ইডিট করতে পারবেন তা কিন্তু নয়, অনেক কন্টেন্ট প্রোডাকশন কোম্পানিতে ভিডিও ইডিটিং সার্ভিস দিয়েই মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করতে পারবেন। [নোট: ৪-৫ মিনিট দৈর্ঘ্যের মিউজিক ভিডিও ইডিট করার জন্য দেশীয় কোম্পানিগুলো এভারেজে ২০-৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রদান করে। একটা ৫০-৬০ মিনিট দৈর্ঘ্যের নাটক ইডিটিং এর জন্য অ্যাভারেজে প্রায় ৮০ হাজার টাকা – ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পেমেন্ট করে।] অ্যাডোবি প্রিমিয়ার প্রো কিছুটা ভারী সফটওয়্যার, তাই ল্যাগিং ছাড়া কাজ করতে চাইলে, আপনাকে অবশ্যই হাই পারফর্ম্যান্স পিসি ব্যবহার করতে হবে।
⏩ আরও পড়ুন: জনপ্রিয় পাঁচটি ফ্রি ভিপিএন!
ক্যামতেসিয়া [Camtasia]:
Camtasia টেকস্মিথ কোম্পানির ডেভেলপ করা এবং অ্যাডোবি প্রিমিয়ার প্রো এর মতন হাই কোয়ালিটির প্রিমিয়াম ভিডিও ইডিটর সফটওয়্যার। তবে মান বিবেচনা করলে, প্রিমিয়ার প্রোর চেয়ে পিছিয়ে থাকবে Camtasia। অবশ্য আপনি যদি ক্যামতেসিয়াতে ইডিটিং এ এক্সপার্ট হয়ে যান, তাহলে ক্যামতেসিয়া দিয়েও প্রফেশনাল লেভেলের ভিডিও ইডিটিং করতে পারবেন অনায়াসে। এ ছাড়াও, ক্যামতেসিয়া দিয়ে ভিডিও ইডিটিং সার্ভিস প্রদান করেও আপনি ইনকাম করতে পারবেন। ক্যামতেসিয়া সফটওয়্যার দিয়ে কাজ করতে আপনার কম্পিউটারের কনফিগারেশন মোটামুটি লেভেলের হলেই চলবে। এ ছাড়া ক্যামতেসিয়াতে থাকা ফিচারগুলো প্রিমিয়ার প্রো এর চেয়ে সহজ হওয়ায় কাজ করতে বেশ সুবিধা।
মোভাভি [Movavi]:
Movavi হলো বর্তমানের সবচেয়ে ইজি, হ্যান্ডি এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি ভিডিও ইডিটিং সফটওয়্যার। আমরা আমাদের নিজেদের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজের ভিডিও ইডিটের জন্য ৫ বছর ধরে Movavi ইউজ করি। Movavi এর আমরা একটা মজার নাম দিয়েছিলাম, সেটা হলো- ‘গরিবের প্রিমিয়ার প্রো’। বিগিনার ফ্রেন্ডলি সফটওয়্যার হওয়ার কারণে স্বভাবতই মোভাভির ফিচার অ্যাডোবি প্রিমিয়াম প্রো আর ক্যামতেসিয়া এর চেয়ে কিছুটা কম এবং মানের দিক দিয়েও কিছুটা লো। তবে নতুন হিসেবে এই হালকা সফটওয়্যার দিয়ে ভালোই কাজ চালানো যায়। আপনি যদি অন্য কোম্পানিকে সার্ভিস না দিয়ে, শুধু নিজের ইউটিউব চ্যানেল আর ফেসবুক পেজের জন্য ভিডিও ইডিট করেন, তাহলে শুরুর দিকে প্রিমিয়ার প্রো / ক্যামতেসিয়ার প্যাঁচালে না গিয়ে; মোভাভি ট্রাই মারতে পারেন!
⏩ আরও পড়ুন: সেরা ৫টি প্লে স্টোর গেম!
**********
প্রিয় পাঠক, এই ছিল- সেরা ৩টি ভিডিও ইডিটিং সফটওয়্যার সম্পর্কে বিস্তারিত! আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন যে, প্রফেশনাল কাজ করতে ও ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে আপনাকে প্রিমিয়ার প্রো মাস্টার হতে হবে! তবে শুধু নিজের চ্যানেল বা পেজে কাজ করলে ক্যামতেসিয়া / মোভাভি দিয়ে কাজ চালিয়ে দিতে পারেন!
পোস্টটি পড়ে উপকৃত হলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন! এই ধরনের আরও পোস্ট পড়তে টেকউইকি২৪ সাইটে যুক্ত থাকুন!