Skip to content
Home » ইউটিউব শর্টস থেকে আয় করার উপায়!

ইউটিউব শর্টস থেকে আয় করার উপায়!

ইউটিউব শর্টস থেকে আয় করার উপায়!

এর আগের পোস্টে আমরা— ‘ফেসবুক রিলস থেকে আয় করার উপায়!’ সম্পর্কে জেনেছিলাম। ওই পোস্টে আমরা বলেছিলাম যে, আমাদের পরবর্তী পোস্ট হবে— ইউটিউব শর্টস নিয়ে। আগামীকাল অর্থাৎ ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখ থেকে ইউটিউব শর্টস ভিডিয়োতে মনিটাইজেশন অপশন চালু হতে যাচ্ছে। তাই আজকেই আমরা এই বিষয়ে বিশদ পোস্ট করছি। তো, টেকউইকির আজকের পোস্টে আমরা জানব— ইউটিউব শর্টস ভিডিয়ো কী, ইউটিউব শর্টস থেকে আয় করার উপায়, কীভাবে ইউটিউব শর্টস নিয়ে কাজ করবেন, সবকিছু নিয়ে বিস্তারিত। চলুন শুরু করা যাক।

ইউটিউব শর্টস থেকে আয় করার বিভিন্ন উপায়

ইউটিউব শর্টস কী? 

ইউটিউব শর্টস হলো মূলত ইউটিউবের শর্ট ভিডিয়ো শেয়ারিং ফিচার। এটি মূলত টিকটক ও ফেসবুক রিলসের মতো; অবশ্য ফেসবুক রিলসের আগেই ইউটিউব শর্টস এসেছে। এই ফিচার ইউজ করে ইউটিউব ইউজাররা ১-৬০ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের ভার্টিকেল [মোবাইল স্ক্রিন সাইজের] ভিডিয়ো শেয়ার করতে পারে ইউটিউবে। ফেসবুক রিলসের মতোই, ইউটিউব শর্টস ভিডিয়ো পাব্লিশিং এর সময় ইউজাররা বিভিন্ন অপশনস; যেমন— ফিল্টার অ্যাড করা, অ্যাফেক্ট অ্যাড করা, টেক্সট অ্যাড করা, অন্যের মিউজিক / সাউন্ড অ্যাফেক্ট অ্যাড করা; ইত্যাদি ইউজ করতে পারে।

বড়ো ভিডিয়োর চেয়ে ইউটিউবে শর্টস ভিডিয়ো দ্রুত ভাইরাল হয়। এজন্য সাবক্রাইবার ও ওয়াচটাইম বাড়ানোর জন্য, ইউটিউবাররা শর্টস ভিডিয়ো ছাড়তো। অবশ্য শর্টস থেকে ইনকামও করা যেত। এখন সেই ইনকামের পথ আরও সহজ হয়েছে। এবার আমরা সেসব বিষয়ে বিস্তারিত জানব।

⏩ আরও পড়ুন: ইউটিউব মনিটাইজেশন ছাড়া আয় করার কয়েকটি উপায়!

ইউটিউব শর্টস থেকে আয় করার উপায়

ইউটিউব শর্টস ফান্ড বোনাস

শর্টস ক্রিয়েটরদের উদ্ধুদ্ধ করার জন্য, ইউটিউব ‘ইউটিউব শর্টস ফান্ড’ নামে একটা ১০০ মিলিয়ন ডলারের ফান্ড ক্রিয়েট করেছিল। সেই ফান্ড থেকে এতদিন পর্যন্ত প্রতি মাসে ইলিজিবল ক্রিয়েটরদের তাদের শর্টস ভিডিয়োতে ভিউ – অ্যাঙ্গেজমেন্টের ভিত্তিতে ১০০ – ১০০০০ ডলার পর্যন্ত বোনাস দিত। আজকের তারিখ [৩১/০১/২০২৩] পর্যন্ত এই বোনাস ফান্ডই ছিল ইউটিউব শর্টস থেকে আয় করার একমাত্র উপায়। কিন্তু সমস্যা হলো, এই বোনাস ফান্ড সকল ক্রিয়েটর পেত না, যাদের লাখ লাখ মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউস আছে, শুধুমাত্র তারাই বোনাস ফান্ডের জন্য ইলিজিবল হতো। কিন্তু গত ডিসেম্বর মাসে ইউটিউব বড়ো ছোটো সকল ক্রিয়েটরের জন্য দারুণ সংবাদ নিয়ে এসেছে। এখন থেকে বড়ো ভিডিয়োর মতো ইউটিউব শর্টস ভিডিয়োও মনিটাইজ করা যাবে! তবে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করে।

তো, এবার চলুন ইউটিউব শর্টস মনিটাইজেশন সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক।

ইউটিউব শর্টস মনিটাইজেশন

আগামীকাল থেকে ইউটিউব শর্টস ভিডিয়োতে মনিটাইজেশন অপশন চালু হতে যাচ্ছে। তো, আপনার ইউটিউব চ্যানেল যদি আগে থেকেই বড়ো ভিডিয়ো দিয়ে মনিটাইজ হয়, তাহলে আপনাকে আর নতুন করে কিছু করতে হবে না, আগামীকাল থেকে আপনার সকল শর্টস ভিডিয়ো অটোমেটিক মনিটাইজ হয়ে যাবে। ফলে আপনি বড়ো ভিডিয়োর পাশাপাশি শর্টস ভিডিয়ো থেকেও ইনকাম করতে পারবেন।

তবে আপনার চ্যানেল যদি নন-মনিটাইজ হয়, তাহলে আপনাকে মনিটাইজেশন পেতে ইউটিউবের নির্দিষ্ট ক্রাইটেরিয়া ফিলাপ করতে হবে। ইউটিউব মনিটাইজেশনের ক্রাইটেরিয়াতে কিছুটা পরিবর্তন এনেছে ইউটিউব। আগের অপশনের পাশাপাশি এখন নতুন একটা অপশনও এনেছে। দুইটার যেকোনো একটা ক্রাইটেরিয়া ফিলাপ হলেই আপনার ইউটিউব চ্যানেলে মনিটাইজেশন পেয়ে যাবেন। আর মনিটাইজেশন পেলে আপনার বড়ো ভিডিয়ো আর শর্টস ভিডিয়ো উভয় ভিডিয়োতেই আপনি অ্যাড রেভেনিউ আয় করতে পারবেন। তো, চলুন ইউটিউবের নতুন মনিটাইজেশন ক্রাইটেরিয়া দেখে নিই!

⏩ আরও পড়ুন: অনলাইন থেকে আয় করার সেরা ৫টি উপায়!

ইউটিউবের মনিটাইজেশন ক্রাইটেরিয়া

ইউটিউব মনিটাইজেশন ক্রাইটেরিয়া

ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে অ্যাপ্রুভ পাওয়ার জন্য আপনাকে ছবিতে দেখা যাচ্ছে এই ক্রাইটেরিয়া দুটোর যেকোনো ১টি অবশ্যই পূরণ করতে হবে। ক্রাইটেরিয়া গুলো হলো—

  • সাবস্ক্রাইবার: আপনার চ্যানেলে অবশ্যই ১০০০ সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে। এটা কিন্তু ম্যান্ডেটরি, ৯৯৯ টা সাবস্ক্রাইবার হলেও চলবে না।
  • ওয়াচটাইম / ভিউ: ওয়াচটাইম ও ভিউসের হিসেবটা একটু প্যাঁচানো। তাই আপনাকে একটু মন দিয়ে পড়ে বুঝতে হবে। আমরা যতটা সম্ভব ইজিলি বুঝানোর চেষ্টা করছি। মনিটাইজেশন পেতে হলে, আপনাকে ১০০০ সাবস্ক্রাইবারের পাশাপাশি, বড়ো ভিডিয়োতে লাস্ট ১২ মাসে ৪০০০ ঘণ্টা পাব্লিক ওয়াচটাইম পেতে হবে অথবা ইউটিউব শর্টস ভিডিয়োতে লাস্ট ৩ মাসে / ৯০ দিনে ১০ মিলিয়ন [এক কোটি] ভিউস পেতে হবে। এখন দুইটা ক্রাইটেরিয়া কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা, যেকোনো একটা ফিলাপ করতে পারলেই আপনি মনিটাইজেশন পাবেন। তবে, এখানে একটা বিষয় আছে, আগে ইউটিউব শর্টস ভিডিয়োতে যে ওয়াচটাইম হতো সেটা ‘৪০০০ ঘণ্টা পাব্লিক ওয়াচটাইম’ ক্রাইটেরিয়াতে অ্যাড হতো; কিন্তু এখন থেকে সেটা আর হবে না। অর্থাৎ শর্টস ভিডিয়োর শুধু ভিউস কাউন্ট হবে, ওয়াচটাইম হবে না। ফলে, আপনাকে কাজ শুরু করার আগেই টার্গেট করে নিতে হবে আপনি বড়ো ভিডিয়ো দিয়ে মনিটাইজ করবেন নাকি শর্ট ভিডিয়ো দিয়ে মনিটাইজ করবেন! আপনি যদি বড়ো ভিডিয়ো দিয়ে কাজ শুরু করেন, তাহলে ১ বছর বা ১২ মাসের মধ্যে আপনার বড়ো ভিডিয়োগুলোর মধ্যে ৪০০০ ঘণ্টা ওয়াচটাইম আনতে হবে। আর যদি শর্টস ভিডিয়ো নিয়ে করেন, সেক্ষেত্রে ৩ মাস / ৯০ দিনের মধ্যে আপনার শর্টস ভিডিয়োগুলোতে ১ কোটি ভিউ আনতে হবে। আপাত দৃষ্টিতে শর্টসের অপশনটা কঠিন মনে হলেও, আসলে শর্টস ভাইরাল হলে প্রতিদিন ১ লক্ষ+ ভিউস পাওয়া কঠিন কিছু না! আর ওপরেই লিখেছি, মনিটাইজেশন পেতে আপনার শুধু যেকোনো ১টা ক্রাইটেরিয়া পূরণ করতে হবে; আর মনিটাইজেশন পেয়ে গেলে আপনি সব ধরনের ভিডিয়োই মনিটাইজ করতে পারবেন। অর্থাৎ, ধরুন আপনি বড়ো ভিডিয়ো দিয়ে ৪০০০ ঘণ্টা ওয়াচটাইম ক্রাইটেরিয়া ফিলাপ করে মনিটাইজ পেলেন, এরপর আপনি চাইলে চ্যানেলে ইউটিউব শর্টস ছেড়েও ইনকাম করতে পারবেন। আবার, আপনি শর্টস ভিডিয়ো দিয়ে ১ কোটি ভিউস ক্রাইটেরিয়া ফিলাপ করে মনিটাইজ পেলেও এরপরে বড়ো ভিডিয়ো ছেড়ে ইনকাম করতে পারবেন।

এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে, ইউটিউবের এই অফিশিয়াল ব্লগ পোস্টটা পড়তে পারেন: Earn Money On YouTube Shorts! 

⏩ আরও পড়ুন: ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম!

শর্টস মনিটাইজেশন টাইপ

ইউটিউব শর্টস ভিডিয়োতে মনিটাইজেশন পেলে, আপনি শর্টসে বিভিন্ন ধরনের মনিটাইজেশন ফিচার ইউজ করে ইনকাম করতে পারবেন। যেমন-

শর্টস ফিড অ্যাড

বড়ো ভিডিয়োতে যেমন অ্যাড দেখায়, এই শর্টস ফিড অ্যাড হলো তেমন। অর্থাৎ আপনার শর্টস ভিডিয়োতে ভালো ভিউ আসলে এই শর্টস ফিড অ্যাড থেকেই মূলত ইনকাম হবে।

সুপারস

ফ্যানদের সাথে এঙ্গেজমেন্টের মাধ্যমে আয় করার এই মনিটাইজেশন ফিচার অনেক আগে থেকেই বড়ো ভিডিয়োতে আছে। এখন এগুলো শর্টস ভিডিয়োতেও ইউজ করা যাবে। সুপারসে আবার ৩ ধরনের অপশন আছে— সুপার চ্যাট, সুপার স্টিকার, সুপার থ্যাংক্স। এগুলো সবই যেহেতু ভিউয়ার / ফ্যানকে সরাসরি টাকা খরচ করে ক্রিয়েটরকে দিতে হয়, বাংলা কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হলে আপনার এগুলার আশা না করায় ভালো!

ইউটিউব শর্টস মনিটাইজেশন সম্পর্কে ভিডিয়ো টিউটোরিয়াল দেখতে চাইলে নিচের ভিডিয়োটি দেখতে পারেন:

⏩ আরও পড়ুন: সেরা ৩টি ভিডিও ইডিটিং সফটওয়্যার!

**********

প্রিয় পাঠক, এই ছিল— এই ছিল ইউটিউব শর্টস থেকে আয় করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত। আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন। পরবর্তীতে আমরা আয়-উপার্জন বিষয়ে আরও ইনফরম্যাটিভ আর্টিকেল পাব্লিশ করব।

আজকের মতো এই পর্যন্তই! আর্টিকেলটির কোনো কিছু না বুঝলে কিংবা কোনো প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন! আর্টিকেলটি ভালো লাগলে, পরিচিত বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন! এ ধরনের আরও নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে টেকউইকিতে চোখ রাখুন।

পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন:

মন্তব্য করুন: